মানুষের কিডনিতে পাথর তৈরি হয় কিভাবে?


কিডনিতে পাথর তৈরি হয় কিভাবে?
মানুষের কিডনিতে পাথর তৈরি হওয়ার মূল কারণ হলো রক্তে নির্দিষ্ট কিছু পদার্থের মাত্রাতিরিক্ত জমা হওয়া। সেই উপাদানগুলো স্ফটিকে পরিণত হতে পারে অর্থাৎ খুব ধীর প্রক্রিয়ার দ্বারা জামাটবদ্ধ হয়ে কঠিন পাথরে রূপান্তরিত হয়। কিডনির প্রধান কাজ হল শরীরের তরল, খনিজ ও লবণের ভারসাম্য বজায় রাখা এবং কিডনি শরীরের বর্জ্য পদার্থ প্রস্রাবের মাধ্যমে বাইরে বের করে দেয়। কিন্তু এই প্রক্রিয়ার সময় যদি কিডনির মধ্যে বর্জ্য পদার্থগুলো (যেমন ক্যালসিয়াম, অক্সালেট, ইউরিক অ্যাসিড, ফসফেট ইত্যাদি) অতিরিক্ত সঞ্চিত হয় এবং যা কিনা ক্রমান্বয়ে জমাটবদ্ধ হয়ে শুরুর দিকে ছোট ছোট বালুকণার আকার ধারণ করে, কিন্তু পরবর্তীকালে তা বাড়তে বাড়তে ১০-১৫ মিলিমিটার পাথরে পরিণত হতে পারে। এর সংখ্যা এক বা একাধিক হতে পারে।

কিডনিতে পাথর তৈরির কারণ:
* উচ্চ ক্যালসিয়াম, অক্সালেট, ইউরিক অ্যাসিড ও সোডিয়াম বা লবণ পদার্থ। কিছু খাবারে এই উপাদান গুলো বেশি পরিমাণে থাকে, যেমন দুধ ও দুগ্ধজাত পদার্থ, জাঙ্ক ফুড ইত্যাদি। আবার কিছু প্রাকৃতিক শাক সবজির মধ্যেও এই উপাদানগুলি থাকে কিন্তু তা আদৌ ক্ষতিকারক নয়।
* অতিরিক্ত প্রাণীজ প্রোটিনযুক্ত খাবার বিশেষ করে মাছ মাংস ডিম দুধ, যা কিনা কিডনিতে পাথর সৃষ্টি করতে পারে।
* এছাড়া ধূমপান মদ্যপান বা যে কোন মাদকদ্রব্য কিডনিতে পাথর তৈরির প্রবণতাকে উসকে দেয়।
* গ্যাস্ট্রিক বাইপাস সার্জারি বা কিডনির সার্জারি করা হলে পরবর্তীকালে কিডনিতে পাথর সৃষ্টি হতে পারে।
* এলোপ্যাথিক ওষুধ (অ্যাসপিরিন, অ্যান্টাসিড, ডাইইউরেটিক্স, এন্টিবায়োটিক ইত্যাদি) কিডনিতে পাথর সৃষ্টি করে। এটি পাথর সৃষ্টির বড় কারণ হতে পারে, যেহেতু মানুষ আজকাল এলোপ্যাথিক ওষুধ ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেন।
* পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান না করলে কিডনিতে পাথর তৈরি হতে পারে।

মানুষ ভাবেন যে, কিডনিতে পাথর মানেই সার্জারি করতে হবে। কিন্তু বাস্তব হলো যে, সার্জারি কোনো সমাধান নয়। বরং সার্জারির মাধ্যমে অক্ষত কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং তাতে পরবর্তীকালে পুনরায় পাথর তৈরি হয়।
কিডনির পাথর দূর করার সহজ উপায় আছে। সঠিক পথ্য ও প্রাকৃতিক ভেষজ ওষুধের দ্বারাই প্রকৃত নিরাময় সম্ভব। এই প্রসঙ্গে পরবর্তী প্রতিবেদনে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। প্রয়োজন হলে আপনি হোমিওপ্যাথ আয়ুর্বেদ বা ন্যাচারোপ্যাথ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতেই পারেন।

Medical disclaimer-
এই প্রতিবেদনে প্রদত্ত তথ্য শুধুমাত্র শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে সংকলন করা হয়েছে। আতএব কোনো রোগের চিকিৎসা ও ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
           ~ রাম রানা 

মন্তব্যসমূহ