পোস্টগুলি

স্বাস্থ্য সংবাদ লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মানুষের পেটে অ্যাসিডিটি বা অম্বল কেন হয়?

মানুষের পেটে অ্যাসিডিটি বা অম্বল কেন হয়? মানুষ তথা প্রতিটি প্রাণীকে খাদ্য খেতেই হয়, অন্যথায় জীবনের অস্তিত্ব টিকে থাকতে পারে না। কারণ শরীরকে শক্তি প্রদান করে খাদ্য। কিন্তু এই খাদ্য যদি হজম না হয় তাহলে চরম বিপত্তি ঘটবে। তাইতো শরীরের অভ্যন্তরে রচিত হয়েছে অনন্য পৌষ্টিকতন্ত্র বা হজমের প্রকৌশল। চর্ব্য চোষ্য লেহ্য পেয় যেভাবে গ্রহীত করা হোক না কেন, খাদ্য প্রথমে পৌঁছে যায় পেটে বা পাকস্থলীর মধ্যে। এখান থেকেই খাদ্য হজমের মূল প্রক্রিয়া শুরু হয়। যেমন- * পাকস্থলী থেকে নিঃসৃত হয় গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিড (HCI), যা কিনা খাবার হজমের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এই অ্যাসিড খাবারের মধ্যে থাকা প্রোটিনকে ভেঙে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে পরিণত করে। এভাবে খাদ্যকে ভেঙে ফেলার মানে হল হজমের প্রাথমিক ও প্রধান শর্ত। আবার এই অ্যাসিড খাদ্য হজমে সাহায্যকারী এনজাইমকে অধিক কার্যকরী করে তোলে, যেমন নিষ্ক্রিয় পেপসিনোজেনকে সক্রিয় পেপসিনে রূপান্তর করে দেয়। তারপর সক্রিয় এনজাইম খাদ্য হজমে সাহায্য করে অর্থাৎ খাদ্যের প্রোটিন ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট জাতীয় পুষ্টি উপাদান সমূহকে ভেঙে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণায় রূপান্তর করে। তখন ক্ষুদ্র খাদ্...

সাধারণ কাশি প্রসঙ্গে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা:

কাশি কোনো রোগ নয়, এতে মানুষের প্রাণহানির প্রশ্নই নেই। এটি খুবই সাধারণ একটি উপসর্গ, যা কিনা যেকোনো মানুষের ক্ষেত্রে বছরে একবার দুবার হতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের কাশি অধিক লক্ষ্য করা যায়। আসুন তাহলে আজ কাশি প্রসঙ্গে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নেওয়া যাক: কাশি কেন হয়? আমাদের শ্বসনতন্ত্রে যদি জীবাণু ধুলো ধোঁয়া বা অন্যান্য ক্ষতিকারক কণাগুলো প্রবেশ করে তখন সুচতুর শরীর এই অবাঞ্ছিত পদার্থ সমূহকে বাইরে বের করে দেওয়ার প্রয়াস করে। এই প্রয়াসের অন্য নাম হলো কাশি, এটি আসলে শরীরের প্রতিরক্ষামূলক রণকৌশল। সুতরাং শারীরিক বিজ্ঞান বা দেহতত্ত্ব অনুসারে- কাশি কখনো কৃত্রিমভাবে থামিয়ে দেওয়া উচিত নয়। কারণ এর মাধ্যমে শ্বসনন্তন্ত্র থেকে জীবাণু বা টক্সিন পদার্থ বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়। অর্থাৎ কাশি হল শরীরকে সুরক্ষিত রাখার বিশেষ কার্যক্রম। কিন্তু কাশির এই কার্যপ্রক্রিয়া ঠিক কিভাবে সংঘটিত হয়? নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো- কাশির প্রক্রিয়া প্রধানত তিনটি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়: ১. প্রথমে আমাদের শ্বসনন্তন্ত্র স্বতন্ত্রভাবে একটি গভীর শ্বাস গ্রহণ করে (inhalation), এবং গৃহীত বাতাস দ্বারা ফুসফুস পরিপূর্ণ হয়। ...

জ্বর প্রসঙ্গে কিছু কথা:

জ্বর কোনো রোগ নয় বরং রোগজীবাণুকে নষ্ট করার একটি প্রয়াস। জ্বর হলো শরীরের বর্ধিত উষ্ণতা তথা আরোগ্যের অগ্নিস্নান। আমাদের শরীরের অভ্যন্তরে কোনো দুষ্ট ভাইরাস প্রবেশ করলে, তাকেই বলে ভাইরাল ইনফেকশন। এই ভাইরাল ইনফেকশন হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। ভাইরাস ছড়িয়ে আছে পরিবেশে যত্রতত্র সর্বত্র, জলে, স্থলে, বায়ুমণ্ডলে। ভাইরাস ছড়িয়ে থাকতে পারে যে কোন প্রাণীর দেহে, সেই প্রাণীটি হতে পারে কীটপতঙ্গ, পশু, পাখি, মনুষ্য বা মৎস্যাদি। ভাইরাস হলো একটা অণুজীব বা ক্ষুদ্র জীবাণু। জীবজগতে ভাইরাসের মোট সংখ্যা অবশ্যই অসংখ্য। তবুও বিজ্ঞানীদের মতে আনুমানিক সংখ্যাটা হলো ১০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০০ (১×১০^৩১)। আসলে আমাদের চারপাশে এত বিপুল ভাইরাস ছড়িয়ে আছে যে, আমরা যেন ভাইরাসের সমুদ্রে ডুবে আছি। ভাইরাসের উপকারিতা- ভাইরাস হল জীবদেহের এক নিত্য সহচর, জীবজগতের পরম বন্ধু। জৈবিক বাস্তুতন্ত্রে এদের গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল ভূমিকা রয়েছে, যা জীবনের অস্তিত্ব ও ভারসাম্য রক্ষায় অপরিহার্য। এক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের নিজস্ব কোষের সংখ্যা প্রায় ৩০ ট্রিলিয়ন, কিন্তু এর সাথে থাকে ৩৯ ট্রিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া এবং ৩৮০ ট্রিলিয়ন ভাইরাস (১ ট...

ডায়াবেটিস রোগের বিষয়ে কিছু কথা:

যারা তথাকথিত ডায়াবেটিস রোগী, তারা কি বাস্তবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত? প্রশ্নটা উঠছে এই কারণে যে, ডায়াবেটিস রোগের উপসর্গ অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও কেবলমাত্র ব্লাডসুগার টেস্টের ভিত্তিতে তাদেরকে ডায়াবেটিস রোগী বলে ঘোষণা করা হয়। বিশেষত খালি পেটে সকালবেলায় ব্লাড সুগার টেস্ট করা হয়। এমন একটি ধারণা পোষণ করা হয় যে, সকালে খালি পেটে মানুষের রক্তে শর্করার পরিমাণ কম থাকে। এই ধারণা অনুসারে যদি রক্ত পরীক্ষায় দেখা যায় যে, শর্করার মাত্রা অধিক তাহলে সেই ব্যক্তিকে ডায়াবেটিস রোগী বলে প্রতিপন্ন করা হয়। কিন্তু প্রকৃত চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুসারে জানা গেছে যে, খালি পেটে সকালবেলায় ব্লাডসুগার কম থাকে না বরং বেশি থাকে অর্থাৎ গ্লুকোজের স্বাভাবিক ভারসাম্য বজায় থাকে। আসুন, এই বিষয়টা সঠিকভাবে বুঝে নেওয়া যাক: * সারারাত কিছু না খাওয়া বা দীর্ঘসময় খাদ্যের অভাবে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায় ভোরবেলায়। তখন কোষগুলি গ্লুকোজের অভাবে দুর্বল হয়ে যেতে পারে বা এনার্জি উৎপন্ন করতে পারে না। ফলত শরীরের অভ্যন্তরীণ ক্রিয়া কলাপ ব্যাহত হতে পারে এবং ব্যক্তি তার বাহ্যিক কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে দুর্বলতা অনুভব করবে। কিন্তু ...

কিডনির সমস্যা বা ডায়ালিসিস চলছে?

কিডনির সমস্যা বা ডায়ালিসিস চলছে? আসুন আজ এক গভীর সত্য অনুসন্ধান করা যাক। কারণ সত্য আপনাকে সুরক্ষা প্রদান করবে। সচেতনতা আপনাকে বাঁচাতে পারে রোগব্যাধির বিপদ থেকে। তাহলে ধৈর্য সহকারে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনটি পড়া যাক। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা কিডনির সমস্যাকে এমন এক ভয়ঙ্কর রূপে তুলে ধরে, যেন একবার সূত্রপাত হলে তা অনিবার্যভাবে ডায়ালিসিস বা কিডনি-প্রতিস্থাপন, এবং তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঝুঁকে পড়া। কিন্তু এমন তো হওয়ার কথা নয়। কারণ, খুবই সাধারণ উপসর্গ যেমন প্রস্রাব কয হওয়া বা পা ফুলে ওঠা, যা কিনা সঠিক চিকিৎসার দ্বারা খুব সহজে সেরে যাওয়ার কথা। কিন্তু এই সাধারণ উপসর্গ নিয়ে মানুষ যখন চিকিৎসা কর্মীর কাছে পৌঁছে যায়, তখন বলা হয় যে এটি কিডনি-রোগ, খুব খারাপ সমস্যা। তার নানা রকমের প্যাথলজিক্যাল টেস্ট করা হয়, উঠে আসে সোডিয়াম পটাশিয়াম বা ক্রিটিনাইনের আতঙ্ক। অতঃপর শুরু করে দেওয়া হয় চিকিৎসা পর্ব, কিন্তু রোগী আরোগ্য লাভ করতে পারে না, বরং তার সমস্যা আরও বেড়ে যায়। তার কিডনি ক্রমশ খারাপ হতে থাকে। তারপর শুরু হয় ডায়ালিসিসের পর্ব অর্থাৎ রোগীকে একটি নির্মম যন্ত্রের সঙ্গে বেঁধে ফেলা হয়। বলা হয় য...

ডায়াবেটিস রোগের উপসর্গ কি কি?

বর্তমানে সারা বিশ্বে ডায়াবেটিস এক আতঙ্ক, এক মহামারি। কিন্তু কেন? এই রোগের কি সঠিক চিকিৎসা নেই? কেনইবা আজীবন ধরে মেডিসিন তথা কেমিক্যাল সেবন করতে হয়? কেনইবা কৃত্রিম ইনসুলিন ব্যবহার করতে হয়? ইনসুলিন ব্যবহারকারী শিশুরা গভীরভাবে পীড়িত হয়। রোগী সেরে উঠতে পারে না, বরং তার জটিলতা বেড়ে যায়, মেডিসিনের পরিমাণ ও ইনসুলিনের মাত্রা লাগাতার বাড়ানো হয়। চিকিৎসার খরচ বহন করতে গিয়ে গরিব ও মধ্যবিত্ত পরিবারে নেমে আসে আর্থিক দুর্দশা। তাই হয়তো আজ রোগে নয়, বরং রোগের চিকিৎসা জনিত কারণে পীড়িত মানুষের অন্তরে করুণ জিজ্ঞাসা- কোথাও কি নেই একফোঁটা আরোগ্য? কোথাও কি নেই এক প্রকৃত বৈদ্য? কোথাও কি নেই একটু সঞ্জীবনী ঔষধ? এই জিজ্ঞাসার জবাব আজও দেয়নি চিকিৎসা ব্যবসায়ীরা। অথচ চিকিৎসা-বিজ্ঞান আবিষ্কার করে গেছে আরোগ্যের মূলমন্ত্র- প্রতিটি রোগের কারণ আছে, কারণটি নিবারণ করলেই নিশ্চিত নিরাময় লাভ করা যায়। একেই বলে Holistic healing/medicine. চিকিৎসা বিজ্ঞানের এই অমোঘ সিদ্ধান্ত অনুসারে ডায়াবেটিস, ক্যান্সার বা যেকোনো রোগের নিশ্চিত আরোগ্য আছে। ডায়াবেটিস রোগ আসলে কি? Diabetes এর আসল নাম হল হল মধুমেহ বা বহুমূত্র। মা...

মানুষের কিডনিতে ও পিত্তথলিতে পাথর তৈরি হয় কিভাবে?

ছবি
পিত্তথলির পাথর ও কিডনির পাথর সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো: পিত্তথলিতে পাথর তৈরি হয় কিভাবে? লিভারের নিচে অবস্থিত একটি ছোট্ট থলির মতো অঙ্গ, যার নাম পিত্তথলি। এখানেই জমা হয় লিভার থেকে নিঃসৃত পিত্তরস। তৈলাক্ত খাদ্যবস্তু বা চর্বিযুক্ত খাবার হজম করতে এই পিত্তরস বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কিন্তু আমাদের ত্রুটিপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনশৈলের কারণে যখন এই পিত্তরসের উপাদানগুলোর ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়, তখন পিত্তথলিতে পাথর তৈরি হয়। এই পাথরগুলো ছোট বালুকণার আকারে হতে পারে, আবার ১০-১৫ মিলিমিটার আকারের বড় পাথরে পরিণত হতে পারে। পিত্তপাথর তৈরি হওয়ার মূল কারণ নিচে উল্লেখ করা হলো: * অতিরিক্ত কোলেস্টেরল: পিত্তথলিতে যে পিত্তরস সঞ্চিত হয় তাতে বিশেষ কিছু উপাদান পাওয়া যায়, যেমন কোলেস্টেরল, বিলিরুবিন এবং পিত্ত লবণ (bile salts)। সাধারণত পিত্তরসে যে পর্যাপ্ত পরিমাণে পিত্ত লবণ থাকে তার দ্বারা কোলেস্টেরল দ্রবীভূত হয়। কিন্তু কখনো কখনো এর ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়ে পড়ে, হয়তো পিত্ত লবণের মাত্রা কমে যায় বা কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এমতাবস্থায় কিছু পরিমাণ কোলেস্টেরল অদ্রবীভূত অবস...