ডায়রিয়া নিরাময়ের উপকারী জিরা ও বেলপাতা:
ডায়রিয়া নিরাময়ের উপকারী জিরা ও বেলপাতা:
ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা কোনো রোগ নয়, বরং শরীরকে সুস্থ রাখার প্রতিরক্ষামূলক প্রক্রিয়া। কারণ শরীর থেকে জীবাণু, টক্সিন বা দূষিত পদার্থ বাইরে বহিষ্কৃত হয় ডায়রিয়ার মাধ্যমে, অর্থাৎ এটা হল শরীরের শুদ্ধিকরণ তথা বিষ অপসারণ (Detoxification).
সাধারণ ডায়রিয়ার কারণ:
* অনেক সময় ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া বা পরজীবী জাতীয় জীবাণু আমাদের পেটে প্রবেশ করে বিশেষত আমাদের গৃহীত পানীয় ও খাদ্যবস্তুর মাধ্যমে। তখন ডায়রিয়ার উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
* আবার পানীয় জল ও খাদ্যের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে পারে টক্সিন, পেস্টিসাইড (কীটনাশক বিষ), অন্যান্য ক্ষতিকারক কেমিক্যাল পদার্থ।
উপরে উল্লেখিত দুটি ক্ষেত্রেই শরীরের ইমিউন সিস্টেম সতর্ক হয়ে ওঠে। পাকস্থলী লিভার ও অন্ত্রের সক্রিয়তা বৃদ্ধি পায়, এরা পেট থেকে জীবাণু বা টক্সিন পদার্থ বহিষ্কার করতে তৎপর হয়ে ওঠে। অতঃপর সৃষ্টি হয় ডায়রিয়া বা বারবার পাতলা মল নিঃসরণ। এভাবে মল ও তরলের সঙ্গে আটকে গিয়ে জীবাণু বা টক্সিন বাইরে বেরিয়ে যায়। সাধারণত দু একদিন ধরে চলা এই প্রক্রিয়ায় পুনরায় শরীরের শুদ্ধিকরণ হয়।
তাহলে এটাই বোঝা গেল যে- ডায়রিয়া কোনো রোগ নয়, পরন্তু শরীরকে সুস্থ রাখার একটি সুচারু প্রক্রিয়া। কিন্তু মেডিকেল ইন্ডাস্ট্রি এটিকে রোগ বলে গণ্য করে, এবং ডায়রিয়া নিবৃত্ত করার নিমিত্তে ব্যবহার করা হয় সোডিয়াম ক্লোরাইড যুক্ত ORS ও IV স্যালাইন। এছাড়াও কেমিক্যাল যুক্ত ড্রাগস প্রয়োগ করা হয়। এভাবে যদি পাতলা পায়খানা বহিষ্করণের প্রক্রিয়াটি থামিয়ে দেওয়া হয় তাহলে জীবাণু বা টক্সিন পদার্থ শরীরের জমে থাকবে, যা কিনা আক্রান্ত ব্যক্তির পক্ষে অস্বাস্থ্যকর ও হানিকারক।
ডায়রিয়া হলে আমাদের কি করনীয়?
পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, ডায়রিয়া হল পরিশোধনকারী প্রক্রিয়া, তাই আমাদের উচিত শরীরকে সাপোর্ট করা, যাতে এই প্রক্রিয়াটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন হতে পারে।
এমতাবস্থায় সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো সঠিক পথ্য ও প্রাকৃতিক ভেষজ। এই বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো নিচে:
সঠিক পথ্য- রান্না করা খাদ্যবস্তু বা অগ্নিপক্ক যে কোন খাদ্যবস্তু গ্রহণ করা যাবে না। বিশুদ্ধ জলপান করতে হবে। পানীয় জল হালকা উষ্ণ হলে ভালো। সারাদিনে ২-৩ টি ডাবের জল পান করলে খুব ভালো। যদি খিদে পায়, আবারো বলছি যে- যদি খিদে পায় তাহলে খেতে পারেন অল্প ফলমূল অথবা কাঁচা সবজি। কাঁচা সবজি মানে শসা টমেটো বীট গাজর মুলা ইত্যাদি।
এটা করতে পারলে একদিনের মধ্যে ডায়রিয়া সেরে যায়। যদি কারোর একদিনে সম্পূর্ণ নিরাময় না হয় তাহলে দুদিন এই নিয়ম পালন করতে হবে। অতঃপর ব্যক্তি নিজেই অনুভব করতে পারবে যে- সে সুস্থ ও সবল হয়ে উঠেছে।
জিরা- ডায়রিয়ার সময় একটি ভালো ভেষজ ঔষধি হলো জিরা। এক চামচ (প্রায় ২ গ্রাম) কাঁচা জিরা জলে (২৫০-৩০০ ml) ফুটিয়ে হালকা উষ্ণ অবস্থায় সেই জল পান করা যেতে পারে সারাদিনের দু'বার। এটি অন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়াতে ও পেট পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
বেলপাতা- আয়ুর্বেদ অনুসারে অতিসার (ডায়রিয়া) এবং পাচনতন্ত্রের গোলযোগের জন্য একটি শক্তিশালী ভেষজ হল বেলপাতা। এতে ট্যানিন ও অ্যালকালয়েড জাতীয় উপাদান থাকায় এর অ্যাস্ট্রিনজেন্ট প্রভাব আছে, যা কিনা অন্ত্রের শ্লৈষ্মিক ঝিল্লিকে স্থিতিস্থাপকতা প্রদান করে। অর্থাৎ এটি ডায়রিয়া নিরাময়ে কার্যকরী।
বেলপাতা এন্টিব্যাকটেরিয়াল ও এন্টিপ্যারাসিটিক হিসাবে কাজ করতে সক্ষম। পেটের মধ্যে ইনফেকশন সৃষ্টিকারী জীবাণুগুলিকে নষ্ট করতে পারে।
বেলপাতা অগ্নিমান্দ্য দূর করে, খাদ্য পরিপাক প্রক্রিয়াকে উন্নত করে।
বেল পাতায় অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি গুণ থাকায় এটি অন্ত্রের জ্বালা ও প্রদাহ দূর করে, অন্ত্রের ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে।
বেলপাতা ব্যবহারের পদ্ধতি:
প্রায় ৭টি কাঁচা বেলপাতা নিয়ে প্রায় ৩০০ml জলে ফুটিয়ে সেই জল গরম অবস্থায় পান করতে হবে সারাদিনে দুবার। যদি তাজা বেলপাতা না পাওয়া যায় তাহলে বেল পাতার গুঁড়ো এক চামচ একইভাবে ব্যবহার করতে পারেন।
মনে রাখবেন যে- প্রাকৃতিক তত্ত্ব ও পথ্য দ্বারাই প্রকৃত চিকিৎসা সম্ভব। ডায়রিয়া হলে এই প্রাথমিক চিকিৎসা নীতি ব্যবহার করার সাথে সাথে একজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের বা কবিরাজের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
Medical disclaimer-
এই প্রতিবেদনে প্রদত্ত তথ্য শুধুমাত্র স্বাস্থ্য সম্পর্কে শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে উপস্থাপন করা হয়েছে। আতএব কোনো রোগের চিকিৎসা ও ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
~ রাম রানা
ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা কোনো রোগ নয়, বরং শরীরকে সুস্থ রাখার প্রতিরক্ষামূলক প্রক্রিয়া। কারণ শরীর থেকে জীবাণু, টক্সিন বা দূষিত পদার্থ বাইরে বহিষ্কৃত হয় ডায়রিয়ার মাধ্যমে, অর্থাৎ এটা হল শরীরের শুদ্ধিকরণ তথা বিষ অপসারণ (Detoxification).
সাধারণ ডায়রিয়ার কারণ:
* অনেক সময় ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া বা পরজীবী জাতীয় জীবাণু আমাদের পেটে প্রবেশ করে বিশেষত আমাদের গৃহীত পানীয় ও খাদ্যবস্তুর মাধ্যমে। তখন ডায়রিয়ার উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
* আবার পানীয় জল ও খাদ্যের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে পারে টক্সিন, পেস্টিসাইড (কীটনাশক বিষ), অন্যান্য ক্ষতিকারক কেমিক্যাল পদার্থ।
উপরে উল্লেখিত দুটি ক্ষেত্রেই শরীরের ইমিউন সিস্টেম সতর্ক হয়ে ওঠে। পাকস্থলী লিভার ও অন্ত্রের সক্রিয়তা বৃদ্ধি পায়, এরা পেট থেকে জীবাণু বা টক্সিন পদার্থ বহিষ্কার করতে তৎপর হয়ে ওঠে। অতঃপর সৃষ্টি হয় ডায়রিয়া বা বারবার পাতলা মল নিঃসরণ। এভাবে মল ও তরলের সঙ্গে আটকে গিয়ে জীবাণু বা টক্সিন বাইরে বেরিয়ে যায়। সাধারণত দু একদিন ধরে চলা এই প্রক্রিয়ায় পুনরায় শরীরের শুদ্ধিকরণ হয়।
তাহলে এটাই বোঝা গেল যে- ডায়রিয়া কোনো রোগ নয়, পরন্তু শরীরকে সুস্থ রাখার একটি সুচারু প্রক্রিয়া। কিন্তু মেডিকেল ইন্ডাস্ট্রি এটিকে রোগ বলে গণ্য করে, এবং ডায়রিয়া নিবৃত্ত করার নিমিত্তে ব্যবহার করা হয় সোডিয়াম ক্লোরাইড যুক্ত ORS ও IV স্যালাইন। এছাড়াও কেমিক্যাল যুক্ত ড্রাগস প্রয়োগ করা হয়। এভাবে যদি পাতলা পায়খানা বহিষ্করণের প্রক্রিয়াটি থামিয়ে দেওয়া হয় তাহলে জীবাণু বা টক্সিন পদার্থ শরীরের জমে থাকবে, যা কিনা আক্রান্ত ব্যক্তির পক্ষে অস্বাস্থ্যকর ও হানিকারক।
ডায়রিয়া হলে আমাদের কি করনীয়?
পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, ডায়রিয়া হল পরিশোধনকারী প্রক্রিয়া, তাই আমাদের উচিত শরীরকে সাপোর্ট করা, যাতে এই প্রক্রিয়াটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন হতে পারে।
এমতাবস্থায় সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো সঠিক পথ্য ও প্রাকৃতিক ভেষজ। এই বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো নিচে:
সঠিক পথ্য- রান্না করা খাদ্যবস্তু বা অগ্নিপক্ক যে কোন খাদ্যবস্তু গ্রহণ করা যাবে না। বিশুদ্ধ জলপান করতে হবে। পানীয় জল হালকা উষ্ণ হলে ভালো। সারাদিনে ২-৩ টি ডাবের জল পান করলে খুব ভালো। যদি খিদে পায়, আবারো বলছি যে- যদি খিদে পায় তাহলে খেতে পারেন অল্প ফলমূল অথবা কাঁচা সবজি। কাঁচা সবজি মানে শসা টমেটো বীট গাজর মুলা ইত্যাদি।
এটা করতে পারলে একদিনের মধ্যে ডায়রিয়া সেরে যায়। যদি কারোর একদিনে সম্পূর্ণ নিরাময় না হয় তাহলে দুদিন এই নিয়ম পালন করতে হবে। অতঃপর ব্যক্তি নিজেই অনুভব করতে পারবে যে- সে সুস্থ ও সবল হয়ে উঠেছে।
জিরা- ডায়রিয়ার সময় একটি ভালো ভেষজ ঔষধি হলো জিরা। এক চামচ (প্রায় ২ গ্রাম) কাঁচা জিরা জলে (২৫০-৩০০ ml) ফুটিয়ে হালকা উষ্ণ অবস্থায় সেই জল পান করা যেতে পারে সারাদিনের দু'বার। এটি অন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়াতে ও পেট পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
বেলপাতা- আয়ুর্বেদ অনুসারে অতিসার (ডায়রিয়া) এবং পাচনতন্ত্রের গোলযোগের জন্য একটি শক্তিশালী ভেষজ হল বেলপাতা। এতে ট্যানিন ও অ্যালকালয়েড জাতীয় উপাদান থাকায় এর অ্যাস্ট্রিনজেন্ট প্রভাব আছে, যা কিনা অন্ত্রের শ্লৈষ্মিক ঝিল্লিকে স্থিতিস্থাপকতা প্রদান করে। অর্থাৎ এটি ডায়রিয়া নিরাময়ে কার্যকরী।
বেলপাতা এন্টিব্যাকটেরিয়াল ও এন্টিপ্যারাসিটিক হিসাবে কাজ করতে সক্ষম। পেটের মধ্যে ইনফেকশন সৃষ্টিকারী জীবাণুগুলিকে নষ্ট করতে পারে।
বেলপাতা অগ্নিমান্দ্য দূর করে, খাদ্য পরিপাক প্রক্রিয়াকে উন্নত করে।
বেল পাতায় অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি গুণ থাকায় এটি অন্ত্রের জ্বালা ও প্রদাহ দূর করে, অন্ত্রের ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে।
বেলপাতা ব্যবহারের পদ্ধতি:
প্রায় ৭টি কাঁচা বেলপাতা নিয়ে প্রায় ৩০০ml জলে ফুটিয়ে সেই জল গরম অবস্থায় পান করতে হবে সারাদিনে দুবার। যদি তাজা বেলপাতা না পাওয়া যায় তাহলে বেল পাতার গুঁড়ো এক চামচ একইভাবে ব্যবহার করতে পারেন।
মনে রাখবেন যে- প্রাকৃতিক তত্ত্ব ও পথ্য দ্বারাই প্রকৃত চিকিৎসা সম্ভব। ডায়রিয়া হলে এই প্রাথমিক চিকিৎসা নীতি ব্যবহার করার সাথে সাথে একজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের বা কবিরাজের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
Medical disclaimer-
এই প্রতিবেদনে প্রদত্ত তথ্য শুধুমাত্র স্বাস্থ্য সম্পর্কে শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে উপস্থাপন করা হয়েছে। আতএব কোনো রোগের চিকিৎসা ও ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
~ রাম রানা
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন